অ্যালগরিদম কি ?




অ্যালগরিদম কি



অ্যালগরিদম কি ?

অ্যালগরিদম কি ?


 অ্যালগরিদম হল ধাপে ধাপে সাজানো নির্দেশাবলীর সেট বা সু-সংজ্ঞায়িত নিয়মগুলির একটি ক্রম যা একটি কম্পিউটার বা মেশিন একটি নির্দিষ্ট সমস্যা সমাধান বা একটি নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করতে অনুসরণ করতে পারে।

আমরা আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে কোনো কাজ করার সময় কাজটি একসাথে শেষ করতে পারি না। কাজটি ধাপে ধাপে পর্যায়ক্রমে সম্পাদন করতে হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, একজন চা বিক্রেতা যখন চা প্রস্তুত করেন তখন তাকে কাজটি ধাপে ধাপে পর্যায়ক্রমিকভাবে শেষ করতে হয়।

যেমন –


১। চা তৈরির উপকরণ সংগ্রহ কর।

২। কেটলিতে পরিমাণ মতো পানি দাও।

৩। চুলা জ্বালিয়ে কেটলিতে  তাপ দাও।

৪। পানি কি ফুটল? উত্তরে হ্যাঁ  হলে ৫ নং ধাপে গমন। না হলে ৩ নং ধাপে গমন।

৫।  পরিমাণ মতো চা পাতা, চিনি, দুধ ইত্যাদি উপকরণ কেটলির পানিতে মিশাও।

৬। কিছুক্ষন পর ছাকনি দিয়ে চায়ের কাপে চা ছেকে নাও।

৭। চা তৈরি হয়েছে।


এসব ধাপ সঠিকভাবে অনুসরণের মাধ্যমে চা প্রস্তুত সম্পন্ন হয়। এক্ষেত্রে চা বিক্রেতা তার ইচ্ছেমতো কাজ করলে তার কাঙ্খিত  আউটপুট (চা) প্রস্তুত করতে সক্ষম হবেন না।

আরেকটি উদাহরন লক্ষ্য করি। ধরি, পড়া মুখস্ত করা সমস্যাটি সমাধান করতে হবে। সমাধানের অ্যারগরিদম নিচে দেওয়া হলো।


ধাপ-১: নির্দ্দিষ্ট বিষয়ে পড়া শুরু।

ধাপ-২: কিছুক্ষণ পড়তে থাক।

ধাপ-৩: পড়া মুখস্ত হলে তা খাতায় লিখ।

ধাপ-৪: লিখিত উত্তরটি সঠিক হয়েছে?  হ্যাঁ হলে  ৫ নং ধাপে গমন।  না হলে ১ নং ধাপে গমন।

ধাপ-৫: পড়া মুখস্ত হয়েছে।

ধাপ-৬: পড়ার কাজ শেষ।


প্রোগ্রামিংয়ের ক্ষেত্রেও প্রত্যেকটি সমস্যা সমাধানের জন্য এরূপ কতকগুলো যৌক্তিক ধাপ অনুসরণ করতে হয়। এই ধাপসমূহ অনুসরণের মাধ্যমেই কেবল একজন প্রোগ্রামার তার পরিকল্পিত প্রোগ্রামটির সফল বাস্তবায়ন করতে পারেন।

অ্যালগরিদম আধুনিক কম্পিউটিং-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যাহা  সাধারণ দৈনন্দিন কাজ থেকে শুরু করে জটিল বৈজ্ঞানিক সমাধান করা পর্যন্ত বিস্তৃত অ্যাপ্লিকেশনে ব্যবহৃত হয়।

তাহলে, সহজ ভাষায় অ্যালগরিদম শব্দের অর্থ হলো ধাপে ধাপে সমস্যার সমাধান করা। একটি সমস্যা সমাধানের জন্য সমস্যাটিকে কয়েকটি ধাপে ভেঙ্গে প্রত্যেকটি ধাপ পর পর সমাধান করে সমগ্র সমস্যা সমাধান করার যে প্রক্রিয়া তার লিখিত বর্ণনাকে অ্যালগরিদম বলা হয়।

 এক কথায়, অ্যালগরিদম হলো কোনো প্রোগ্রামিং সমস্যা সমাধানের যৌক্তিক ধারাবাহিক বিবরণ।

অ্যালগরিদমগুলি বিভিন্ন আকারে প্রকাশ করা যেতে পারে, যেমন ফ্লোচার্ট, সিউডোকোড বা প্রোগ্রামিং ভাষায় প্রকৃত কোড।


অ্যালগরিদম তৈরির শর্ত


১। অ্যালগরিদম যে সমস্যাটি সমাধান করার উদ্দেশ্যে তৈরি তা অবশ্যই স্পষ্ট ইনপুট এবং আউটপুট সহ ভালভাবে সংজ্ঞায়িত করা উচিত।

২। অ্যালগরিদম অবশ্যই ধাপগুলির একটি যৌক্তিক ক্রম অনুসরণ করার জন্য ডিজাইন করা উচিত যা নির্দ্দিষ্ট ফলাফলের দিকে নিয়ে যাবে ৷

৩। অ্যালগরিদমের ধাপগুলি অবশ্যই স্পষ্ট হতে হবে৷

৪।  অ্যালগরিদমটি অবশ্যই সঠিক হতে হবে, যার অর্থ এটি অবশ্যই সমস্ত সম্ভাব্য ইনপুটের জন্য পছন্দসই আউটপুট তৈরি করবে।


অ্যালগরিদমের প্রয়োজনীয়তা:


১। সমস্যা সমাধান: অ্যালগরিদম সমস্যা-সমাধানের  একটি  পদ্ধতি  যা কম্পিউটার বিজ্ঞান, গণিত এবং প্রকৌশলের মতো ক্ষেত্রে অপরিহার্য।জটিল সমস্যাগুলিকে আরও ছোট, আরও পরিচালনাযোগ্য পদক্ষেপে বিভক্ত করে, অ্যালগরিদমগুলি আরও কার্যকর এবং দক্ষতার সাথে সমস্যাগুলি সমাধান করতে সহায়তা করে।

২। দক্ষতা: অ্যালগরিদম পুনরাবৃত্তিমূলক কাজগুলিকে স্বয়ংক্রিয় করে এবং  ডেটা বিশ্লেষণের মতো প্রক্রিয়াগুলির দক্ষতা উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি আউটপুটে ত্রুটি বা অসঙ্গতির ঝুঁকি কমায়।

৩।  অ্যালগরিদম তৈরি কোন প্রোগ্রাম পরিবর্তন ও পরিবর্ধনে সহায়তা করে।

৪।  অ্যালগরিদম জটিল প্রোগ্রাম সহজে ও সংক্ষেপে লিখতে সহায়তা করে।

৫। অ্যালগরিদম প্রোগ্রাম তৈরির উদ্দেশ্য সহজে বুঝতে সহায়তা করে।

















Related :

অনুবাদকপ্রোগ্রাম কি? কতপ্রকার ওকি কি?