অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন




অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন

অ্যাসনিক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমশিন কি?

যে ডেটা ট্রান্সমিশন সিস্টেমে ডেটা প্রেরক হতে প্রাপক কম্পিউটারে ক্যারেক্টার বাই ক্যারেক্টার অর্থাৎ একটির পর একটি ক্যারেক্টার ট্রান্সমিট হয় তাকে অ্যাসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন বলে।

অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন

পদ্ধতি : এ পদ্ধতিতে প্রতি ক্যারেক্টারের শুরুতে একটি শুরু (Start) বিট এবং শেষে একটি বা দুটি শেষ (Stop)  বিট ও ভুল নির্ণয় বিট (Error Chack bit) থাকে। সাধারণত একটি ক্যারেক্টার এর জন্য ৭ বিটের প্রয়োজন। এই ৭ বিটের সাথে শুরু (Start),  শেষ (Stop)  ও প্যারিটি বিট (Parity bit) সম্মিলিতভাবে ১০ থেকে ১১ বিটের ক্যারেক্টার পাঠায়।

এ সিস্টেমে যেকোনো সময় ডেটা প্রেরণ করা যায় এবং প্রাপক (Receiver)  তা গ্রহণ করতে পারে। ডেটা পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রেরকের কোনো প্রাইমারি স্টোরেজ এর প্রয়োজন হয় না। একটি ক্যারেক্টার পাঠানোর পর আর একটি ক্যারেক্টার পাঠানোর ক্ষেত্রে ক্যারেক্টারদ্বয়ের মধ্যবর্তী বিরতি সময় (interval Time) সমান না হয়ে ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। অল্প পরিমাণ ডেটা ট্রান্সমিট করার জন্য এ পদ্ধতি বেশি উপযোগী। এই ডেটা ট্রান্সমিশনে অসুবিধা হলো যখন ডেটা ট্রান্সমিট হয় না, তখন ট্রান্সমিশন মিডিয়াটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকে, যা মাইক্রোওয়েভ বা স্যাটেলাইট মিডিয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তাছাড়া এই ডেটা ট্রান্সমিশনে গতি কম থাকে।

অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের বৈশিষ্ট্যাবলি

Characteristics of Asynchronous Transmission

১.অল্প করে ডেটা পরিবহনের দরকার পড়ে এমন পরিবেশ যেমন, ইন্টারনেটে এই পদ্ধতি বেশি উপযোগী।

২.এতে প্রেরক যে কোনো সময় ডেটা পাঠাতে পারে এবং গ্রাহক তা গ্রহণ করতে পারে।

৩.প্রেরকের কোনো প্রাইমারি স্টোরেজ ডিভাইসের প্রয়োজন হয় না।

৪.ডেটা ট্রান্সমিশনের শুরুতে একটি স্টার্ট বিট ও শেষ হওয়ার আগে একটি অথবা ২ টি স্টপ বিট প্রেরণ করতে হয়।

৫.এতে ডেটা ট্রান্সমিশনের গতি কম। সাধারণত 56 kbps হয়ে থাকে।

অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের সুবিধা, অসুবিধা এবং ব্যবহার

Advantages, Disadvantages, and Application of Asynchronous Transmission

নিচে অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের সুবিধা, অসুবিধা ও ব্যবহার আলোচনা করা হলো-

অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের সুবিধাসমূহ:

(Advantages of Asynchronous Transmission)

১.  অল্প করে ডেটা পরিবহনের দরকার পড়ে এমন পরিবেশ যেমন, ইন্টারনেটে এই পদ্ধতি বেশি উপযোগী।

২. এতে প্রেরক যেকোনো সময় ডেটা পাঠাতে পারে এবং গ্রাহক তা গ্রহণ করতে পারে।

৩. প্রেরকের কোনো প্রাইমারি স্টোরেজ ডিভাইসের প্রয়োজন হয় না।

৪. ইন্সটলেশন খরচ অত্যন্ত কম।

অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের অসুবিধাসমূহ

(Disadvantages of Asynchronous Transmission)

১. ডেটা ট্রান্সমিশনের শুরুতে একটি স্টার্ট বিট ও শেষ হওয়ার আগে একটি স্টপ বিট প্রেরণ করতে হয়।

২. এতে অতিরিক্ত বিট ব্যবহার করা হয় বলে এটি সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের চেয়ে কম দক্ষ।

৩. এতে ডেটা ট্রান্সমিশনের গতি কম। সাধারণত 56 kbps হয়ে থাকে।

৪. ডেটা চলাচল বন্ধ থাকার সময় মাধ্যমটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকে।

৫. স্যাটেলাইট বা মাইক্রোওয়েভের ক্ষেত্রে ট্রান্সমিশন বন্ধ থাকলে তা ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে।

অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের ব্যবহার

(Application of Asynchronous Transmission)

১. কম্পিউটার হতে প্রিন্টারে ডেটা স্থানান্তরে এ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়।

২. কী-বোর্ড হতে কম্পিউটারে ডেটা স্থানান্তরে এ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়।

৩. পাঞ্চকার্ড রিডার হতে কম্পিউটারে এবং কম্পিউটার হতে পাঞ্চকার্ডে ডেটা স্থানান্তরে এ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়।



ডেটা ট্রান্সমিশন দক্ষতা

Data transmission efficiency

ট্রান্সমিশন দক্ষতাকে নি¤œরূপে সংজ্ঞায়িত করা হয়

ট্রান্সমিশন দক্ষতা বলতে  ট্রান্সমিশনে ব্যবহৃত তথ্য বিটের মোট সংখ্যা  (অর্থাৎ, ব্যবহারকারীর পাঠানো বার্তার বিট) ও ট্রান্সমিশনের মোট বিট (যেমন, তথ্য বিট এবং ওভারহেড বিট) এর অনুপাতকে বুঝায়।

ট্রান্সমিশন দক্ষতা এর  গানিতিক প্রতিপাদন –

উদাহরণস্বরূপ, আসুন আমরা অ্যাসিঙ্ক্রোনাস ট্রান্সমিশনের ট্রান্সমিশন দক্ষতা গণনা করি। ধরে নি আমরা 8-বিট ASCII ব্যবহার করছি। এখানে 8 বিটের মধ্যে একটি প্যারিটি বিট যুক্ত রয়েছে। ওভারহেড বিটের সংখ্যা 1টি স্টার্ট বিট এবং 2 টি স্টপ বিট। অতএব, তথ্যের প্রতিটি অক্ষরে রয়েছে 8 বিট , তবে প্রতি অক্ষরে মোট বিট হবে (8+ 3) = 11। অ্যাসিঙ্ক্রোনাস ট্রান্সমিশন সিস্টেমের কার্যকারিতা হল 8 বিট তথ্যকে 11 টি মোট বিট বা 80 শতাংশ দ্বারা ভাগ করা।

অ্যাসিঙ্ক্রোনাস ট্রান্সমিশনের ট্রান্সমিশন দক্ষতা =

8/11 × 100% =72.7%

আমরা প্রতিটি বার্তায় ওভারহেড বিটের সংখ্যা কমিয়ে বা তথ্য বিটের সংখ্যা বাড়িয়ে দক্ষতা উন্নত করতে পারি। উদাহরণস্বরূপ, যদি আমরা অ্যাসিঙ্ক্রোনাস ট্রান্সমিশন থেকে স্টপ বিটগুলি সরিয়ে ফেলি, দক্ষতা 8/9 বা 88.8 শতাংশে বৃদ্ধি পায়।


 




কতিপয় সমস্যা :

সৃজনশীল রচনামুলক :

১) নিচের উদ্দিপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

রাজ আইসিটি ক্লাশে শিক্ষকের আলোচনা হতে জানতে পারে যে, ডেটা কমিউনিকেশেনে একটি পদ্বতিতে ডেটা ক্যারেক্টার বাই ক্যারেক্টার ট্রান্সমিট হয় এবং অপর একটি পদ্বতিতে ডেটা বøক আকারে ট্রান্সমিট হয়। সে তার বাসায় তারবিহীন ইন্টারনেট সংযোগ নেয়। ফলে সে দ্রæতগতির ইন্টারনেট ব্যাবহার করতে পারে।
ক) ক্লাউড কম্পিউটিং কি?
খ) আলোক সিগনালে ডেটা স্থানান্তরের মাধ্যমটি ব্যাখ্যা কর।
গ) উদ্দিপকে ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবস্থায় ব্যবহৃত প্রযুক্তি কী? ব্যাখ্যা কর।
ঘ) উদ্দিপকে ট্রান্সমিশন পদ্বতী দুটির মধ্যে কোনটির দক্ষতা বেশী? বিশ্লেষন পূর্বক মতামত দাও।

প্রশ্ন: ঘ) উদ্দিপকে ট্রান্সমিশন পদ্বতী দুটির মধ্যে কোনটির দক্ষতা বেশী? বিশ্লেষন পূর্বক মতামত দাও।
উত্তর: উদ্দিপকে ডেটা ট্রান্সমিশন পদ্বতী দুটি হলো অ্যাসিনক্রোনাস ও সিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন পদ্বতী। এদের মধ্যে সিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন পদ্বতীর দক্ষতা বেশী। যে ডেটা ট্রান্সমিশন সিস্টেমে ডেটা প্রেরক হতে প্রাপক কম্পিউটারে ক্যারেক্টার বাই ক্যারেক্টার অর্থাৎ একটির পর একটি ক্যারেক্টার ট্রান্সমিট হয় তাকে অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন বলে। অপরদিকে যে ডেটা ট্রান্সমিশন সিস্টেমে প্রেরক স্টেশনে ডেটাকে প্রথমে কোনো প্রাইমারি স্টোরেজ ডিভাইসে স্টোর করে নেয়া হয়, অতঃপর ক্যারেক্টারসমূহকে Block আকারে প্রতিবারে ১টি করে Block. ট্রান্সমিট করা হয়, তাকে সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন বলে।

উদ্দিপক অনুসারে ডেটা ট্রান্সমিশন পদ্বতী দুটির মধ্যে বেশি পরিমাণ ডেটা ট্রান্সমিশনের ক্ষেত্রে সিনক্রোনাস পদ্ধতির ব্যবহার সুবিধাজনক। কারন এই পদ্বতীতে বøক আকারে ডেটা ট্রান্সমিট হওয়াতে স্বল্প সময়ে অধিক সংখ্যক ডেটা ট্রান্সমিট করা যায়। অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন পদ্বতীর মত স্টার্ট ও স্টপ বিট না থাকায় এবং অনবরত চলতে থাকায় সিনক্রোনাস পদ্ধতির গতি অনেক দ্রæত হয়। অ্যাসিনক্রোনাস পদ্বতী তে একদিকে যেমন ক্যারেক্টার বাই ক্যারেক্টার ডেটা ট্রান্সমিট হয় আরও প্রয়োজন হয় প্রতিটি প্রতিটি ক্যারেক্টরের ট্রান্সমিটের পর বিরতির (Time interval)। এই সকল দিকগুলো বিবেচনায় বলা যায় উদ্দিপকে ট্রান্সমিশন পদ্বতী দুটির মধ্যে সিনক্রোনাস পদ্বতীর দক্ষতা বেশী।

কতিপয় অনুধাবন মুলক প্রশ্ন:
১) অ্যসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনে সময় বেশী লাগার কারন বুঝিয়ে লিখ ?
২) ”ডেটা বøক বা প্যাকেট আকারে ট্রান্সমিট হয়” – ব্যাখ্যা কর।
৩) কীবোর্ড থেকে কম্পিউটারে ডেটা ট্রান্সমিশন পদ্বতী ব্যাখ্যা কর।

কতিপয় বহুনির্বাচনী প্রশ্ন (MCQ)
১) অ্যাসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশনের সুবিধা কোনটি?
ক) বøক আকারে ডেটা ট্রান্সমিট হয়।
খ) বেশি ডেটা ট্রান্সমিট হয়।
গ) প্রাইমারী ষ্টোরেজ ডিভাইসের প্রয়োজন নেই।
ঘ) বিরতিহীন ভাবে ডেটা ট্রান্সমিট করে।
উত্তর : গ)
২) অ্যাসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন ঘটে কোনটিতে?
ক) কম্পিউটার থেকে কম্পিউটারে
খ) মডেম থেকে মডেমে
গ) কীবোর্ড থেকে কম্পিউটারে
ঘ) কম্পিউটার থেকে মোবাইলে
উত্তর: গ)
৩) কোন পদ্বতীতে ডেটা বøক আকারে ট্রান্সমিট হয়।
ক) সিনক্রোনাস
খ) অ্যাসিনক্রোনাস
গ) ভয়েসব্যান্ড
ঘ) ব্রড ব্যান্ড
উত্তর: ক)
৪) ৫ কিলোবাইট ডেটা আদান প্রদানের ক্ষেত্রে অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের দক্ষতা কত ?
ক) ৭২-৭৩% খ) ৭৭-২৩% গ) ৯০ -২৫ % ঘ) ৯৫ – ২৪%
উত্তর: ক)

সমাধান: ১ বাইট = ৮ বিট
১ কিলো বাইট = ৮০০০ বিট
৫ কিলোবাইট = ৫ X ৮০০০ বিট = ৪০০০০ বিট
অতএব, ট্রান্সমিশনে ব্যবহৃত তথ্য বিটের মোট সংখ্যা = ৪০০০০ বিট
প্রতি ৮ বিট তথ্য ট্রান্সমিশনের জন্য ওভার হেড বিট ব্যবহৃত হয় ৩ টি
১ বিট তথ্য ট্রান্সমিশনের জন্য ওভার হেড বিট ব্যবহৃত হয় ৩/৮
৪০০০০ বিট তথ্য ট্রান্সমিশনের জন্য ওভারহেড বিট হবে ৩/৮X৪০০০০ =১৫০০০ বিট
অতএব, ট্রান্সমিশন কাজে ব্যবহৃত মোট বিট = ৪০০০০ বিট + ১৫০০০ বিট = ৫৫০০০ বিট

= ৪০০০০ বিট /৫৫০০০ বিট X ১০০% = ৭২.৭২%

৫) অ্যাসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশনের বৈশিষ্ট –
i একটির পর একটি ক্যারেক্টার ট্রান্সমিট হয় ii) স্টার্ট বিট ও স্টপ বিট ব্যবহৃত হয়
iii) নির্দ্দিষ্ট সময় পর পর ক্যারেক্টার ট্রান্সমিট হয়
ক) i ও ii খ) iও iii গ) ii ও iii ঘ) i, ii ও iii
উত্তর: ঘ)
৬) অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের বৈশিষ্ট্য কোনটি?
ক) ট্রান্সমিশনের দক্ষতা তুলনামুলক কম
খ) Start bit এবং Stop bit এর প্রয়োজন হয় না
গ) ট্রান্সমিশনের গতি বেশি
ঘ) এটি ব্যায় বহুল
উত্তর: ক)













অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন

Related term:

ডেটা কমিউনিকেশন কি?

ব্যান্ড উইড্থ

সিঙ্ক্রোনাস ট্রান্সমিশন