লজিক গেইট কি? প্রকারভেদ, বৈশিষ্ট্য ও প্রয়োগ




লজিক গেইট কি? প্রকারভেদ বৈশিষ্ট্য ও প্রয়োগ



লজিক গেইট কি? প্রকারভেদ বৈশিষ্ট্য ও প্রয়োগ

লজিক গেইট কি?


লজিক গেইট হলো ডিজিটাল ইলেক্ট্রনিক্স এর মুল ভিত্তি। গণিতবিদ জর্জবুল গণিত ও যুক্তির সমন্বয়ে উদ্ভাবন করেন বুলিয়ান অ্যালজেবরা। পরবর্তীতে বুলিয়ান অ্যালজেবরাকে ডিজিটাল ইলেক্ট্রনিক্সে প্রয়োগ করা হয়। বুলিয়ান অ্যালজেবরার ডিজিটাল ইলেক্ট্রনিক্সে প্রয়োগের জন্য তৈরি করা হয় লজিক গেট।

অর্থাৎ যে সকল ডিজিটাল ইলেক্ট্রনিক সার্কিট যুক্তিভিত্তিক সংকেতের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে সে সকল সার্কিটকে লজিক গেট বলে।  অতএব লজিক গেইট হলো এক ধরনের ইলেক্ট্রনিক সার্কিট।

এই লজিক গেট ডিজিটাল সার্কিটের একটি মৌলিক একক ।  এটি এক বা একাধিক বাইনারি ইনপুটগুলিকে  লজিক্যাল অপারেশন করে একটি একক বাইনারি আউটপুট তৈরি করে। অর্থাৎ, এটি ইনপুট হিসাবে বাইনারি সিগন্যাল (হয় 0 বা 1) নেয় এবং একটি নির্দিষ্ট লজিক্যাল অপারেশন করে একটি আউটপুট তৈরি করে যা একটি বাইনারি সংকেত।

লজিক গেটগুলি জটিল ডিজিটাল সার্কিট তৈরি করতে একত্রিত করা হয়, যেমন অ্যাডার, সাবট্র্যাক্টর, মাল্টিপ্লেক্সার এবং ডিকোডার। এই সার্কিটগুলি কম্পিউটার প্রসেসর, মেমরি চিপ এবং ডিজিটাল সিগন্যাল প্রসেসিং সহ অনেক অ্যাপ্লিকেশন তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।


লজিক গেটের প্রকারভেদ :


ডিজিটাল ইলেক্ট্রনিক্সে লজিক গেটকে প্রধানত দুইটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে ।

১. মৌলিক লজিক গেট       ২. যৌগিক লজিক গেট

১. মৌলিক লজিক গেইট তিন প্রকার। যথা-

১.         OR gate

২.         AND gate

৩.         NOT gate

যৌগিক লজিক গেইট দুই প্রকার। যথা –  ১) সার্বজনীন গেইট   ২) বিশেষ গেইট

সার্বজনীন গেইট দুই প্রকার। যথা –   –  ১) NOR gate           ২) NAND gate

বিশেষ গেইট দুই প্রকার। যথা – ১) X-OR বা, Exclusive OR gate              ২) X-NOR বা, Exclusive NOR gate


লজিক গেইট কি? প্রকারভেদ বৈশিষ্ট্য ও প্রয়োগ

মৗলিকওযৌগিকলজিকগেটবাসার্কিটসমূহের (২ইনপুটের) চিত্রনিম্নেদেখানোহলো :


লজিক গেইট কি? প্রকারভেদ বৈশিষ্ট্য ও প্রয়োগ


লজিক গেইটের বৈশিষ্ট্য :


সমস্ত জটিল ডিজিটাল সিস্টেম লজিক গেটগুলির সংমিশ্রণ থেকে নির্মিত। নিচেএদের কতিপয় বৈশিষ্ট্য আলোচিত হলো।

1. লজিক গেট একটি আউটপুট সিগন্যাল তৈরি করতে ইনপুট সিগন্যালে বুলিয়ান অপারেশন, যেমন AND, OR, and NOT ব্যবহার করে।

2. লজিক গেট AND, OR, এবং NOT-এর মতো যৌক্তিক ক্রিয়াকলাপ সম্পাদন করে ডিজিটাল সংকেতগুলিকে প্রক্রিয়া করে।

3. লজিক গেটগুলিতে এক বা একাধিক ইনপুট টার্মিনাল থাকে যা সিগন্যাল গ্রহণ করে এবং একটি আউটপুট টার্মিনাল যা বুলিয়ান অপারেশনের ফলাফল তৈরি করে।

4. লজিক গেটস ডিজিটাল সিগন্যাল প্রসেস করে, যা শুধুমাত্র দুটি  মান বাইনারি সিগন্যাল: 0 এবং 1।

5. লজিক গেটগুলি আরও জটিল সার্কিট তৈরি করতে আন্তঃসংযুক্ত হতে পারে।

6. লজিক গেটগুলি কমপ্যাক্ট এবং কম্পিউটার চিপগুলির মতো ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলিতে একত্রিত করা যেতে পারে।

7. লজিক গেটগুলি উচ্চ গতিতে কাজ করে, যাহা আধুনিক ইলেকট্রনিক্সে ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত ।

8. লজিক গেট খুব কম শক্তি খরচ করে, যা স্মার্টফোন এবং ল্যাপটপের মতো ব্যাটারি-চালিত ডিভাইসগুলিতে ব্যাবহার্য।

9. লজিক গেটগুলির রয়েছে বহুমুখী ব্যবহার।   অ্যারেথমেটিক সার্কিট,  মেমরি সার্কিট, কন্ট্রোল সার্কিট, কমিউনিকেশন সার্কিট এবং মাইক্রোপ্রসেসরের মতো বিস্তৃত অ্যাপ্লিকেশনে লজিক গেটগুলি ব্যবহার করা যায়।  

10. লজিক গেটগুলি অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য।   


লজিক গেইটের প্রয়োগ


ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্স এবং কম্পিউটার সায়েন্সে লজিক গেটের অসংখ্য অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে।

লজিক গেটগুলি বুলিয়ান বীজগণিত বাস্তবায়নের জন্য ব্যবহার করা হয়, যা লজিক এক্সপ্রেশনগুলিকে সরলীকরণ এবং ম্যানিপুলেট করতে ব্যবহৃত হয়। 

লজিক গেটগুলি যোগকারী (Adder) এবং বিয়োগের (subtractor) মতো অ্যারিথমেটিক সার্কিট তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়। এই সার্কিটগুলি ডিজিটাল সিস্টেমে গাণিতিক ক্রিয়াকলাপ সম্পাদন করে।

মেমরি সার্কিট যেমন- ফ্লিপ-ফ্লপ এবং রেজিস্টারের মতো  সার্কিট তৈরি করতে লজিক গেট ব্যবহার করা হয়। এই সার্কিটগুলি ডিজিটাল সিস্টেমে ডেটা সংরক্ষণ করে।

লজিক গেটগুলি টাইমার এবং কাউন্টারের মতো নিয়ন্ত্রণ সার্কিট তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়। এই সার্কিটগুলি নিয়ন্ত্রণ সংকেত তৈরি করে যা ডিজিটাল সিস্টেমের সময় নিয়ন্ত্রণ করে।

এনকোডার এবং ডিকোডারের মতো যোগাযোগ সার্কিট তৈরি করতে লজিক গেট ব্যবহার করা হয়। এই সার্কিটগুলি ডিজিটাল ডেটা এবং অ্যানালগ সংকেতের মধ্যে রূপান্তর করে।

মাইক্রোপ্রসেসর তৈরি করতে অসংখ্য লজিক গেট ব্যবহৃত হয়, যা কম্পিউটারের কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট (সিপিইউ)। এই সার্কিটগুলি মেমরিতে সংরক্ষিত ডেটার উপর গাণিতিক এবং যৌক্তিক ক্রিয়াকলাপ সম্পাদন করে।

 লজিক গেট হল ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্সের মুল ভিত্তি।  আজকের ডিজিটাল বিশ্বে তাদের অ্যাপ্লিকেশন কার্যত সীমাহীন।
















Related :

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কি ?