ষ্টার টপোলজি কি ?
যে টপোলজিতে একটি কেন্দ্রিয় ডিভাইস যেমন – হাব বা সুইচ এর সাথে অন্য সকল নোড যেমন- কম্পিউটার, প্রিন্টার বা অন্য কোন ডিভাইস তার দিয়ে যুক্ত থেকে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে তাকে ষ্টার টপোলজি বলে। এই টপোলজিতে, কেন্দ্রীয় হাব বা সুইচ একটি সার্ভারের মতো কাজ করে এবং সংযোগকারী নোডগুলি ক্লায়েন্টের মতো কাজ করে।
স্টার টপোলজিগুলি প্রায়শই বাস টোপোলজিগুলির সাথে একত্রিত হয়, যার ফলে একে ট্রি টপোলজি বলা হয়। স্টার টপোলজির সুইচটি বাস টপোলজির ব্যাকবোন এর সাথে সংযুক্ত হলে এটি ঘটে ।
ষ্টার টপোলজি কিভাবে কাজ করে ?
স্টার টপোলজিতে কোনো কম্পিউটার অন্য কম্পিউটারের নিকট মেসেজ পাঠাতে চাইলে সিগন্যাল পাঠায় সরাসরি কেন্দ্রিয় ডিভাইসটির নিকট। কেন্দ্রিয় ডিভাইস হাব, সুইচ বা কেন্দ্রিয় কম্পিউটার সে সিগন্যালকে যুক্ত সব কম্পিউটারে কিংবা ঐ গন্তব্য কম্পিউটারের নিকট পাঠায়। যদি সেই নেটওয়ার্ক হয়ে থাকে ব্রডকাস্ট-বেসড তাহলে কেন্দ্রিয় ডিভাইস থেকে সিগন্যাল যাবে সব ক’টি কম্পিউটারে।
আর যদি সেটি সুইচড নেটওয়ার্ক হয়, তাহলে হাব বা সুইচ সেই সিগন্যালকে নির্দিষ্ট কম্পিউটারের নিকট পাঠিয়ে দেবে। স্টার টপোলজিতে বিভিন্ন ধরনের ক্যাবল ব্যবহার করা যায়।
কেন্দ্রিয় ডিভাইস এর সাথে সংযুক্ত অন্যান্য ডিভাইসগুলি ক্লায়েন্ট হিসাবে পরিচিত। এখানে এই টপোলজিতে ক্লায়েন্টরা RJ-45/ কো-এক্সিয়াল ক্যাবল ব্যবহার করে হাবের সাথে সংযুক্ত থাকে।
স্টার টপোলজির বৈশিষ্ট
স্টার টপোলজির বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপ:
১) সহজে ইনস্টল করা যায় বলে স্টার টপোলজি ব্যবহারিকভাবে যেকোনো ধরনের কম্পিউটার নেটওয়ার্কে ব্যবহার করা যেতে পারে, তা ছোট, মাঝারি বা বড়। ২) বাস টপোলজির তুলনায় স্টার টপোলজিতে বেশি ক্যাবল প্রয়োজন হয় । ৩) অন্যান্য ধরণের টপোলজি স্ট্রাকচারের তুলনায়, স্টার টপোলজির কাঠামো ডেটা হারানোর ক্ষেত্রে আরও নিরাপদ। ৪) কেন্দ্রীয় হাব বা সুইচ খারাপ হয়ে গেলে সমস্ত নেটওয়ার্কটি অচল হয়ে পড়ে। ৫) এই সংঠনের কোনো একটি কম্পিউটার নষ্ট হয়ে গেলে বাকি নেটওয়ার্কে তার প্রভাব পড়ে না।
স্টার টপোলজি ব্যবহারের সুবিধা
১. কেন্দ্রীয় হাব বা সুইচ ব্যবহারের মাধ্যমে নেটওয়ার্কের কেন্দ্রীভূত ব্যবস্থাপনা।
২.নেটওয়ার্ক কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করেই স্টারে নতুন কম্পিউটার যোগ করা সম্ভব।
৩. কেন্দ্রীয়ভাবে ব্যবস্থাপনার জন্য নেটওয়ার্কের সমস্যা নিরূপণ সহজ। ইনটেলিজেন্ট হাব ব্যবহার করলে তার সাহায্যে নেটওয়ার্কের কর্মকাণ্ড তথ্য ওয়ার্কলোড মনিটরিং করা যায়।
৪. নেটওয়ার্কে একটি কম্পিউটার ব্যর্থ হলে, বাকি নেটওয়ার্ক স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে থাকে।
৫. এই সংঠনের কোনো একটি কম্পিউটার নষ্ট হয়ে গেলে বাকি নেটওয়ার্কে তার প্রভাব পড়ে না। খুব সহজেই সমস্যায় আক্রান্ত কম্পিউটারটি সরিয়ে নেয়া যায়।
৬. একই নেটওয়ার্কে বিভিন্ন ধরনের ক্যাবল ব্যবহার করা যায়।
স্টার টপোলজি ব্যবহারের অসুবিধা
১. কেন্দ্রীয় হাব বা সুইচ খারাপ হয়ে গেলে সমস্ত নেটওয়ার্কটি অচল হয়ে পড়ে। কারণ পুরো নেটওয়ার্ক হাবের মাধ্যমেই পরস্পরের সাথে যুক্ত থাকে। এক্ষেত্রে সমস্ত কম্পিউটার নেটওয়ার্ক থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
২. স্টার টপোলজিতে প্রচুর ক্যাবল ব্যবহৃত হয় ।
৩. এটি বাস্তবায়নের জন্য একটি উচ্চ খরচ হতে পারে, বিশেষ করে যখন কেন্দ্রীয় নেটওয়ার্ক ডিভাইস হিসাবে একটি সুইচ বা রাউটার ব্যবহার করা হয়।
৪. কেন্দ্রীয় নেটওয়ার্ক ডিভাইসটি নেটওয়ার্ক পরিচালনা করতে পারে এমন কর্মক্ষমতা এবং নোডের সংখ্যা নির্ধারণ করে।
৫. একটি স্টার টপোলজিতে কতগুলি কম্পিউটার সংযোগ করতে পারে তার প্রযুক্তিগতভাবে কোনও সীমা নেই। এটি হাব বা সুইচের কর্মক্ষমতার উপর নির্ভর করে। তবে নেটওয়ার্কে অধিক কম্পিউটার যুক্ত করা হলে নেটওয়ার্কের গতি কমে যেতে পারে।
ষ্টার টপোলজির ব্যবহার
আজকাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ইনস্টিটিউট, বিমানবন্দর, হাসপাতাল এবং ব্যাঙ্ক ইত্যাদিতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত নেটওয়ার্ক সংযোগ হিসাবে সহজেই ষ্টার টপোলজি খুঁজে পাওয়া যায় ৷
গঠন ও কার্যকারিতার দিক থেকে ষ্টার টপোলজি সুবিধাজনক হওয়ায় এই টপোলজির ব্যবহার ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হয়।
r>
Related Term :